গতকাল বৃহস্প্রতিবার (৩১ অক্টোবর) ছিল মানবতার সংগঠন জাগো নারী ফাউন্ডেশন এর ১৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। উক্ত প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বিকেল পাঁচ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভা।
উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অত্র জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সভাপতি মুস্তারী বেগম যিনি একাধারে কবি, সাহিত্যিক, দক্ষ সংগঠক এবং জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সাথে সৃষ্টিলগ্ন থেকে উতপ্রুত ভাবে জড়িত।
উক্ত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন সুদুর আমেরিকা থেকে জাগো নারী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নুর-উন-নাহার মেরী।
প্রধান অতিথির আসনকে যিনি অলংকৃত করেছিলেন মৌলানা ভাসানী স্মৃতি পরিষদের সম্মানিত সভাপতি:পারভীন নাসের ভাসানী। যিনি মজলুম জনতার জননেতা মৌলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সুযোগ্য পুত্রবধু। উনার মুল্যবান বক্তব্যে মজলুম জনতার জননেতা মৌলানা ভাসানী কি করে ভাসানী নামের উপাধি পেলেন তার জীবনের পুরো ইতিহাসটা জানলে সত্যিই প্রতিটি বাংগালীর অন্তর আত্মা শিহরিত হবে।
উপস্থিত ছিলেন আলোচনা সভার প্রধান আলোচকঃ কবি মাসুম বিল্লাহ। চেয়ারম্যান ভিন্ন মাত্রা রিসার্চ সেন্টার ও মহা সচিব নজরুল চর্চা ফাউন্ডেশন। তিনি তার মুল্যবান বক্তব্যে মানবিকতার নানান দিক তুলে ধরেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন”জাগো নারী ফাউন্ডেশন” আমেরিকা শাখার প্রেসিডেন্ট-নাসিমা আক্তার রোজী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন মির্জা আশরাফুল ইসলাম: সাবেক উপ-পরিচালক প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়।
অনুষ্ঠানটিকে সঞ্চালন করেছেন: অত্র ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী সভাপতি- কবি নাজনীন তৌহিদ
উক্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাগো নারী
ফাউন্ডেশনের সম্মানিত সেক্রেটারি নুর এমডি চৌধুরী। তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জাগো নারী ফাউন্ডেশনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন। আমরা আমাদের সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এর নির্দেশনাক্রমে জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সুফল সারা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।
অনুষ্ঠানটিকে সফল করতে যিনি অসীম ধৈর্যের সাথে কাজ করেছেন: মতিউর রহমান হীরো। অত্র ফাউন্ডেশন এর ডাইরেক্টর অব ফিন্যান্স। উপস্থিত ছিলেন জাগো নারী ফাউন্ডেশন এর সকল এক্সিকিউটিভ সদস্যবৃন্দ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
জাগো নারী ফাউন্ডেশন এর ১৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সকল বক্তাই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন অত্র ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নুর-উন-নাহার মেরীকে। যার অবদানের কথা, অসীম ত্যাগের কথা, জীবনভর সত্যের জন্য সংগ্রামের কথা, অনেক বিসর্জনের কথা আবার অনেক প্রাপ্তির কথা কোনটাই বলে যার কিছুই শেষ করা যাবেনা তিনিই মানবতার মহিয়সী মা, হতদরিদ্র মানুষের আশীর্বাদ, অবহেলিত, শোষিত, বঞ্চিতের বুকভরা ভরসা তিনিই নুর উন নাহার মেরী।
জাগো নারী ফাউন্ডেশনটি দীর্ঘ ১৯ বছর কাল সম্পুর্ন নুর উন নাহার মেরী তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে পরিচালিত করেছেন অদ্যাবধি করে আসছেন। বয়সের ভাড়ে নয় শারিরীক অসুস্থতাও তাকে কোন দিন দমাতে পারেনি এতটুকুও কিন্তু প্রকৃতির যে নিয়ম তাকেতো আর অসীকার করা যাবেনা। তাই তিনি স্বীদ্ধান্ত নিয়েছেন, জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সুফল সারা দেশ বিদেশে একাধারে ছড়িয়ে দিবেন। আর এর জন্য তিনি বেশ কিছু এক্সিকিউটিভ পদে দক্ষ সংগঠক নিয়োগ দিয়েছেন।
আজ থেকে ১৮ বছর আগে এদেশের নারীরা অন্ধকার জগতের বাসিন্দা ছিলো। বাংলাদেশে নয় শুধু বিশ্বব্যাপী এই অবহেলিত নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে আনতে যুগে যুগে দেশে দেশে অনেক মহিয়সী নারীদের আগমন ঘটেছে। সত্য ন্যায় আর অধিকার বাস্তবায়নে সংগ্রামে জীবনভর সংগ্রাম করে গেছেন যারা তাদের মধ্যে নুর-উন-নাহার মেরী তিনিও একজন সংগ্রামী নারী।
জাগো নারী ফাউন্ডেশনের আমেরিকার শাখার প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার রোজী তার মুল্যবান বক্তব্যে বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই ঢাকা শহরে সুবিধা বঞ্চিত পথশিশুদের জন্য ইংলিশ মাধ্যম, বাংলা মাধ্যম স্কুল চালু করেছি। আগামীর দিনগুলোতে অনেক আরও অনেক অনেক পরিকল্পনা আমাদের হাতে রয়েছে বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি!
তিনি আরও বলেন, নুর-উন-নাহার মেরী আপার নির্দেশনাক্রমে এই জাগো নারী ফাউন্ডেশনের ভিত্তিকে আরও সুদৃঢ় আরও শক্তিশালী করে এর সুফল সারা দেশের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হবো বলে আশা করছি।
পরিশেষে “জাগো নারী ফাউন্ডেশনের” পক্ষ থেকে অত্র ফাউন্ডেশন এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শিউলি আক্তার এর ছেলে দীন মোহাম্মদ এর হাতে এওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
জাগো নারী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নুর-উন-নাহার মেরী উক্ত এওয়ার্ড সম্পর্কে বলতে গিয়ে তার ফেইজবুক আইডিতে লিখেন,
দীর্ঘদিন যাবত “জাগো নারী ফউন্ন্জেশনে” নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে শিউলী আখতার। সে একজন গুলী হস্তশিল্প কারিগর। সে নকশী কাঁথা,বিছানার চাদর,টেবিল শ্লথ,কুশন কাভার,ব্যাগ ইত্যাদি তৈরী করে আসছে। সেই সাথে আরও বহুবিদ হস্তশিল্প জনিত শৈল্পিক জিনিস প্রস্তুত করে বাজারে সরবরাহ করে আসছে।
গুনি মায়ের গুনি ছেলে দীন মোহাম্মদ। মীরপুর মডেল স্কুলের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্র সে। মায়ের মত সেও একজন গুনি শীল্পি বা আর্টিষ্ট হয়ে জন্মেছে। তার এই সুপ্ত প্রতিভার কথা তার বাবা মা কেউ সঠিকভাবে জানতোনা বা কখনও তেমন গুরত্ব দেয় নাই। সেই ছেলে দীন মোহাম্মদ প্রখ্যাত এক বানিজিক প্রতিষ্ঠান লা রিভের (La Rever) ১৫ বৎসর পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতীয় ভিক্তিক “স্বপ্নের বাংলাদেশ“ আর্ট প্রতিযোগিতায় তার হাতের আর্ট প্রথম পুরস্কার লাভ করে এবং নগদ টাকা ১০,০০০.০০ প্রাপ্ত হয়।
তার এই গৌরবময় অর্জনে “জাগোনারী ফাউন্ডেশনও” গৌরবান্নিত হযে তাকে এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এবং সেই সাথে শিশু কিশোরদের জন্য লিখা চারটা বই (জাগো নারী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি ও শিশু সাহিত্যিক নাজনীন তওহীদের লেখা বইগুলি উপহার দেয়া হয়।
এওয়ার্ড টি “জাগো নারী ফাউন্ডেশনের” ১৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষকীর দিনে অনুষ্ঠানের সম্মানীত প্রধান অতিথি পারভীন নাসের ভাষানীর হাত থেকে সন্মাননা গ্রহন করে ,
“জাগো নারী ফাউন্ডশন” পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথম পুরুষ্কার বিজয়ী দীন মোহাম্মদ ও তার গর্বিত মা শিউলী আখতার। তাদেরকে জানাই উষ্ন অভিন্ন্দন,প্রানঢালা শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
আগামীতে জীবনে আরও অনেক বড মাপের একজন বিশ্বখ্যাত শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করবে এই প্রার্থনা করি। আমীন।
এরপর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধান অতিথি হাত দিয়ে কেক কাটা হয় সাথে মিষ্টিমুখ করানো হয় সকলকে সেই সাথে সকলের জন্য রাতের খাবার প্যাকেট পরিবেশন করা হয়।