তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইনটি বৈধ নাকি অবৈধ, তা নিয়ে কৌতূহল নেই এমন মানুষের সংখ্যা আজকের তারুণ্যের বাংলাদেশে বিরল।
এ-সংক্রান্ত পৃথক দু’টি রিট আবেদন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে রায়ের জন্য ধার্য ছিল। বেঞ্চে আজকের কার্যতালিকায় রিট দুটি রায়ের জন্য ১ নম্বরে থাকায় শেষ বধি আমরা একটা সন্তোষজনক রায় পেয়ে খুশি হলাম।
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়। অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়। আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট ১৯ আগস্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুলে ইন্টারভেনার (আদালতকে সহায়তা করতে) হিসেবে বিএনপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, সংস্থা, ব্যক্তিসহ বেশ কয়েকজন যুক্ত হন।
শুনানিতে রিট আবেদনকারী, বিএনপি, রাষ্ট্রপক্ষ, জামায়াত, গণফোরাম, ব্যক্তি ও সংস্থার পক্ষে তাদের আইনজীবীরা বক্তব্য তুলে ধরেন। রুলের ওপর গত ৩০ অক্টোবর শুনানি শুরু হয়ে গত ১ ডিসেম্বর শেষ হয়। এ ছাড়া পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ১৭টি ধারার বৈধতা নিয়ে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন অক্টোবরে আরেকটি রিট করেন। গত ৪ ডিসেম্বর ওই রিটের শুনানি নেন আদালত। সেদিনই এই দুই রিটের শুনানি সমাপ্ত ঘোষণা করেন আদালত।
একটি সন্তোষজনক রায়ে খুশি হয়ে জামাতের আমির ডা. শফিকুর রহমান তিনি তার ভেরিফাই ফেইসবুক আইডিতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লিখেন, আলহামদুলিল্লাহ!
বাংলাদেশ আজ পঞ্চদশ সংশোধনীর জঞ্জালমুক্ত হলো।।