Home আর্ন্তজাতিক সব দেশে সহায়তা বন্ধ করলেও বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র

সব দেশে সহায়তা বন্ধ করলেও বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্ট

0

ইসরায়েল ও মিসর ছাড়া অন্যান্য দেশের জন্য নতুন সব ধরনের সহায়তা তহবিল স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। স্থানীয় সময় শনিবার (২৫ জানুয়ারি) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ আদেশ জারি করে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এমন আদেশে ব্যাপক চাপে পড়েছে দেশটির সহায়তা নির্ভর বহু দেশ ও প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি অনিশ্চিত হয়ে গেছে অর্থ বা খাদ্য সহায়তায় চলা বহু দাতব্য সংস্থার কার্যক্রম।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে বাংলাদেশকে সুখবর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি জানিয়েছে, মিয়ানমারের আরাকান থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনরক্ষকারী খাদ্য ও পুষ্টির জন্য অর্থায়ন অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থাৎ দেশটির পক্ষ থেকে দেওয়া সাহায্য স্থগিতাদেশের বাইরে থাকবে বাংলাদেশ।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার এ বছরই বড় আকারে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করবে। এতে ১৭০টি দেশ অংশ নেবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আয়োজিত সম্মেলনের সহআয়োজক জাতিসংঘ। আমেরিকা রোহিঙ্গাদের জন্য দেওয়া সাহায্য বন্ধ করছে না। এজন্য প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাসের কর্মকর্তারা রোববার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলিসংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছেন। সে সময় হাই রিপ্রেজেন্টেটিভকে রোহিঙ্গাদের জন্য দেওয়া মার্কিন সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএইড) সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সহযোগিতা কার্যক্রম স্থগিত করে। এই সংস্থার মাধ্যমে মার্কিন সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) এক চিঠিতে মার্কিন সহায়তায় কার্যক্রম পরিচালনা করা দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে এ কথা জানানো হয়। চিঠিতে সই করেন ইউএসএইডের অধিগ্রহণ ও সহায়তা তত্ত্বাবধায়ক চুক্তি কর্মকর্তা ব্রায়ান অ্যারন।

এতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির আওতাধীন সব প্রকল্প ও কর্মসূচির মার্কিন অংশের ব্যয় বন্ধ রাখতে বলা হয়।

ইউএসএইডের চিঠিতে বলা হয়, ইউএসএআইডি, বাংলাদেশ বাস্তবায়নকারী সব অংশীদারদের চুক্তি, কার্য আদেশ, অনুদান, সমবায় চুক্তি বা অন্য অধিগ্রহণ বা সহায়তা স্মারকের অধীনে সম্পাদিত যে কোনো কাজ অবিলম্বে বন্ধ অথবা স্থগিত করার জন্য একটি নির্দেশনা হিসেবে কাজ করে এ চিঠি। চিঠিতে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে ব্যয় কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া লিখিত কোনো নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয় চিঠিতে। চিঠিতে রেফারেন্স হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কথা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া এই সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে দ্রুত একটি গাইডলাইন পাঠানোর কথাও বলা হয়।

কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গণতন্ত্র ও শাসন, মৌলিক শিক্ষা এবং পরিবেশগত কার্যক্রমের পাশাপাশি বিশ্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য কর্মসূচি নিয়ে বাংলাদেশে ইউএসএআইডি কর্মসূচি এশিয়ার বৃহত্তম। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় ইউএসএআইডি বাংলাদেশে বড় ধরনের মানবিক সহায়তা তদারকি করে।

২০২৪-এ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে মার্কিন দূতাবাস ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিগত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্যনিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং আরও অনেক কিছু মোকাবিলায় ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সঙ্গে অংশীদারত্ব করেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘ফরেইন অ্যাসিস্ট্যান্স ডট গভ’ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্নভাবে বাংলাদেশে ২০২১ সালে ৫০০ মিলিয়ন ডলার, ২০২২ সালে ৪৭০ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩ সালে ৪৯০ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ সালে ৪৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছে দেশটি। রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকে ওয়াশিংটন বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। বিগত কয়েক বছরে মার্কিন সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষ ১০-এর মধ্যেই ছিল বাংলাদেশ

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version