গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই জামালপুর মাদারগঞ্জে আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যায়। এর কিছুদিন পর আত্মবিশ্বাসী নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করলে শুরু হয় গ্রেপ্তার আতঙ্ক। দিশেহারা হয়ে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয় প্রায় সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
মাদারগঞ্জ মডেল থানার তথ্য মতে, ২০২৩ সালের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মাদারগঞ্জ উপজেলার সিধুলী ইউনিয়নের রায়গঞ্জ নামক একটি বাজারে বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের বাঁধা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে কর্মসূচিটাকে নস্যাৎ করে দেয়। ঘটনার দেড় বছর পর গত ২রা সেপ্টেম্বর উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক ও সিধুলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান বাদী হয়ে সিধুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মিরনকে প্রধান করে ৫৭ জনের বিরুদ্ধে এবংকি আরও অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
সেই মামলার প্রথমদিকে কাউকে গ্রেপ্তার করা না হলেও গত ১লা অক্টোবরে অজ্ঞাত হিসেবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১২ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
খবরটি জানাজানি হবার পর থেকেই যেসব নেতাকর্মীরা প্রকাশ্য ঘুরাঘুরি করছিল গ্রেপ্তার আতঙ্কে তারাও এখন গা ঢাকা দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন গুনারীতলা ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান বাছেদ, চরপাকেরদহ ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন, আদারভিটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সামিউল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমেদ, মাদারগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মুনিম সাকিব, আদারভিটা ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস সওদাগর, ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন রিপন, গজারিয়া গ্রামের যুবলীগ নেতা শাহা আলম, সুজন রানা রঞ্জু, বিন্যাফৈর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ছামিউল ইসলাম মানিক ও পৌর তাঁতী লীগ ১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি আল আমীন, সিধুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নং ওয়ার্ডের সভাপতি মাহালম মেম্বার,আদারভিটা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হৃদয় হাসান ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী সেলিম মোল্লা। বর্তমানে প্রত্যেকেই তারা কারাগারে অবস্থান করছেন।
উক্ত প্রেফারের সার্বিক পরিস্থিতি জানার জন্য সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহিনুর আলম জানান,গত ১ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ১৫ জন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছেন তিনি। অভিযানের সময়সীমা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।