বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকের শাসনামলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের নির্যাতন ও হত্যার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে। এতে এক তরুণ বর্ণনা করেছেন কীভাবে তাকে গুম করা হয়েছিল এবং সেই সময় কী ধরনের অত্যাচার চালানো হয়েছিল।
তিনি জানান, এখনও রাতে দরজায় কেউ নক দিলে তার মনে হয়, কেউ তাকে আবার তুলে নিয়ে যাবে। পূর্বাচলের কাঞ্চন ব্রিজের দিকে গেলে সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তাকে তাড়া করে বেড়ায়।
এক রাতে ছাদে পায়চারি করার সময় কিছু লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়। দরজার ফুটো দিয়ে দেখেন, কয়েকজন সিভিল পোশাকের লোক লোডেড পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে আছে। তারা তাকে জোরপূর্বক একটি গাড়িতে তুলে নেয়। পরে তাকে অন্য একটি গাড়িতে স্থানান্তর করা হয়।
কিছুক্ষণ পর তাকে একটি অচেনা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। চোখ বাঁধা অবস্থায় তাকে আন্ডারগ্রাউন্ডের মতো কোনো জায়গায় নেওয়া হয়। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তাকে বলা হয়, মেট্রোতে আগুন দেওয়ার মামলার এক নম্বর আসামি হিসেবে তার নাম হবে। তিনি এলএলবি এবং এলএলএম শেষ করতে পারবেন না বলেও হুমকি দেয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পায়ের তালুতে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়। মারধরের এক পর্যায়ে তাকে বলা হয়, তিনজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে আসতে পারলে হয়তো তাকে মুক্তি দেওয়া হবে।
তারা বলে, “আমরা হাজার হাজার মানুষকে গুম করেছি। আন্তর্জাতিক মিডিয়া আমাদের গুমকারী বলে চিহ্নিত করেছে, কিন্তু কেউ কিছু করতে পারেনি।”
তারপর তাকে হুমকি দেওয়া হয়, “আমরা ৫২ জনকে টুকরো টুকরো করেছি। তুই ৫৩ নম্বর হতে পারিস।”
তিনি বলেন, এসবের মাধ্যমে ভিন্নমতকে দমন করাই তাদের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, এই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, কারণ এক হাসিনা চলে গেলেও তার সহযোগীরা এখনো রয়ে গেছে।
সংবাদ মাধ্যম : জনকণ্ঠ