Home অন্যান্য সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর রমরমা ‘সনদ বাণিজ্য’ : টাকা দিলেই মিলত মুক্তিযোদ্ধা সনদ

সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর রমরমা ‘সনদ বাণিজ্য’ : টাকা দিলেই মিলত মুক্তিযোদ্ধা সনদ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট

0

টাকা দিলেই সহজে মিলত মুক্তিযোদ্ধা সনদ। আর এ কাজ করতেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। টাকার বিনিময়ে তিনি অসংখ্য ব্যক্তিকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়েছিলেন।

মোজাম্মেলের সনদ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ২, ৩ ও ৯নং সেক্টরের প্রায় ৫০ জন সম্মুখযোদ্ধার সঙ্গে কথা হয়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার, যার গেজেট নং (৫৯৩)। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরের জয়দেবপুরে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অন্যতম এই হাসান সরকার। মোজাম্মেল হকের হঠাৎ মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ওঠা নিয়ে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার।
তিনি বলেন, মোজাম্মেল হক নিজেও একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এ নিয়ে কোনো দ্বিমতের সুযোগ নেই। বরং বলতে পারেন তাহলে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হলেন কীভাবে? ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করতে তাকে ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়েছিল। তিনি (আ ক ম মোজাম্মেল হক) মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় নিজে নাম ঢুকিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। সংসদে তিনি এ নিয়ে সমালোচিতও হয়েছে। সেখানে মোজাম্মেল হক মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষী হিসাবে আমার নাম উল্লেখ করেছেন। আমি দ্বিধাহীন ভাষায় বলছি, মোজাম্মেল হক কোথাও যুদ্ধ করেননি এবং তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন।মুক্তিযোদ্ধা ছিলেননা।
মোজাম্মেল হক মুক্তিযোদ্ধা হলে দেশের এক কোটি মানুষকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিতে হবে-এমন মন্তব্য করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জবি উল্লাহ (গেজেট ১০৭ নং)। তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালের লাল মুক্তিবার্তায় মোজাম্মেল হকের নাম নেই। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গেজেট করে সেখানে তাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দিল। এটা জালিয়াতি। তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ বাতিলের দাবি জানান।
জনাব জবি উল্লাহ জানান, ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরের জয়দেবপুরে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের অর্জন আ ক ম মোজাম্মেল হক একজন ছিনতাইকারী। তিনি তৎকালিন সময়ে ছিনতাই করেছেন। তিনি বলেন, এই যুদ্ধের নেতৃত্বে ছিলেন হাসান উদ্দিন সরকার, হাবিবুল্লাহ, নজরুল ইসলাম খান, সৌমেন্দ্র গোস্বামী, সহিদুল ইসলাম পাঠান, মোতালিব, সহিদুল্লাহ বাচ্চু, মো. রফিকুল ইসলাম, শেখ আবুল হোসাইন, আব্দুস সাত্তার। হাজার হাজার মানুষের মধ্যে মোজাম্মেল হকও ছিলেন। অথচ ইতিহাস বিকৃত করে পুরো কৃতিত্ব নিলেন আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বিক্রি করে মোজাম্মেল হক হাজার কোটি টাকা ইনকাম করেছেন-এমন দাবি করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সদস্য খ ম আমীর আলী বলেন, তার (মোজাম্মেল হক) মন্ত্রীর মেয়াদে সারা দেশে কমপক্ষে ২৫ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে। ইতোমধ্যে ১১ হাজার চিহ্নিত করতে পেরেছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। বাকি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version