দীর্ঘ ১০ বছর পর বিশ্বকাপে জয়ের দেখা মিললো অবশেষে! দীর্ঘ প্রত্যাশিত জয়ের আনন্দে কেঁদেই ফেললেন জ্যোতি। মাঝে কেটে যায় ১০ বছর। চার আসরে খেলা হয়েছে ১৬ ম্যাচ। স্বপ্নটা যেন জ্যোতি আগেই বাস্তবে দেখে নিয়েছিলেন। দেশ ত্যাগের আগে নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেছিলেন, জয়ের এই দীর্ঘ খরা কাটানো জ্যোতিদের প্রথম লক্ষ্য।
কিছুটা আক্ষেপ সংগে নিয়েই আরব আমিরাতে পাড়ি জমিয়েছিলেন নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। কেননা, তাদের দীর্ঘ সময়ের প্রত্যাশা ছিলো এবারের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটি আপন ঘরের মাঠেই অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু পরিস্থিতি বলে দিলো অন্য কোথাও।
ম্যাচের শুরুটা ভালো না হলেও অবশেষে জয়ের মুখ ঠিকই দেখতে পেয়েছে বাংলাদেশ দল। এতে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের ১০০তম ম্যাচ খেলতে নামা জ্যোতি। জয়ের এই আনন্দে তিনি এতোটাই উল্লাসীত হয়ে উঠেছিলেন যে, মাঠে অবশেষে কেঁদেই ফেললেন জ্যোতি।
২০১৪ সালে বাংলাদেশ নারী টি-টোয়েন্টি দল প্রথম বিশ্বকাপে অংশ গ্রহণ করে। সেবার ঘরের মাঠে আয়োজিত বিশ্ব আসরের স্থান নির্ধারণী ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ১৭ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর এতোটা বছর কেটে গেলেও আর জয়ের মুখ দেখেননি বাংলাদেশ নারী টি-টোয়েন্টি দল।
পরের বছর জাতীয় দলে অভিষেক হয় জ্যোতির। টানা চার বৈশ্বিক আসরে জয় না পাওয়ার আপেক্ষ নিয়ে, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামবে এবারের উদ্বোধনী ম্যাচ। নিজের শততম ম্যাচে ঘুচালেন সেই আক্ষেপ।
ম্যাচ জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেন, ‘ এই সুন্দর জয়ের মুহূর্তটা দেখার জন্য আমরা অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করে আসছিলাম। আমাদের মনে ছিল, এটাই আমাদের সময়। এই জয় আমাদের জন্য অনেক অর্থবহ। এই ধরনের উইকেটে মানিয়ে নেওয়া জরুরি ছিল, এবং শুরুতে ব্যাট করা মোটেও সহজ ছিল না। তবে রানী ও মোস্তারির পার্টনারশিপ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা একটি ভালো স্কোর দাঁড় করিয়েছিলাম এবং আমাদের নিজেদের ওপর আত্মবিশ্বাস ছিল।’
প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে শততম উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করেন বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার। তাকে অভিনন্দন জানিয়ে নিজের স্পিন আক্রমণের কথা তুলে ধরেন টাইগ্রেস অধিনায়ক, আমাদের স্পিন আক্রমণ খুবই ভালো এবং মারুফাও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে। তাই আমরা বিশ্বাস রেখেছিলাম যে আমরা আমাদের স্কোর ডিফেন্ড করতে পারব। আমরা কিছুটা আলাদা কৌশল নিয়ে কাজ করছি, যেমন আমি নিচে ব্যাট করছি। তাজ (নেহার) শেষ দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো খেলেছিল, এবং পরিকল্পনা ছিল সে কিছু বাউন্ডারি মারবে। যদিও তা সম্ভব হয়নি, তবে আমরা যেভাবে গতি পেয়েছি, তাতে আমি খুশি। মেয়েদের হাসি আমার জন্য সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।’
ম্যাচসেরার পুরস্কার জয়ের পর রিতু মনি বলেন, ‘উইকেট মোটামুটি ভালো ছিল, তাই আমি চেষ্টা করেছি সঠিক লাইনে বল করে আমার বৈচিত্র্য কাজে লাগাতে। আমরা গত বছর অনেক পরিশ্রম করেছি, এবং সেই পরিশ্রম আজ ফল এনে দিয়েছে। এটি আমার এবং দলের জন্য অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত। আমরা কন্ডিশন বুঝে আমাদের শক্তির উপর নির্ভর করে বল করার পরিকল্পনা করেছিলাম। কন্ডিশন অনুযায়ী বল করা এবং প্রতিপক্ষকে চাপে রাখা আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল।।
শনিবার দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ইংল্যান্ড। এ ম্যাচ জিততে পারলে সেমিফাইনালের দৌড়ে অনেকখানি এগিয়ে যাবে টাইগ্রেসরা।