মামুনুল হক (জন্ম নভেম্বর ১৯৭৩) একজন বাংলাদেশী ইসলামিক পণ্ডিত এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব। ২০১০ এর দশকের শেষের দিকে একজন ইসলামপন্থী নেতা হিসাবে আবির্ভূত হন তিনি। বিশেষ করে ঢাকা অবরোধের মারাত্মক ঘটনাগুলির পরে তার পিতা আজিজুল হকের কাছ থেকে ধর্মীয় পাণ্ডিত্য এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের পৈতৃক ঐতিহ্যের সাথে তিনি জামিয়া রাহমানিয়াতে শেখ আল-হাদিস এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব হিসাবে উভয়েই তার পিতার স্থলাভিষিক্ত হন ।
তিনি তার বক্তৃতা দক্ষতা এবং একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এবং সরকারী নীতিতে ইসলামী নীতিগুলিকে একীভূত করার জন্য তার সমর্থনের জন্য সর্বাধিক পরিচিত। ২০২০ এবং ২০২১ সালে, তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং মোদী বিরোধী বিক্ষোভ সংগঠিত করেছিলেন।
যা তাকে রাতারাতি অবিসংবাদিত হেফাজত নেতাতে পরিণত করেছিল। যে কারণে তিনি আইনি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন এবং উনার নামে ৪১টি মামলা দায়ের করা হয়। যার মধ্যে একটি ছিল রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ।
মামুনুল হক শেখ হাসিনার শাসনামলে তিনবার কারাবরণ করেছেন । দীর্ঘ বছরের ক্ষোভ আর হতাশা থেকে দেশের ছাত্র জনতা মরনের ভয় তোয়াক্কা না করে নেমে আসেন রাজপথে। সহস্র প্রাণের বিনিময়ে তারা রক্ষা করেন দেশের গণতন্ত্র। মানুষের কথা বলার অধিকার।
খুনী হাসিনা পদত্যাগ করে বাধ্য হয় দেশ থেকে পালিয়ে যেতে। তার দেশ ত্যাগের পর, তিনি রাষ্ট্রপতি এবং সেনাপ্রধানের সাথে আলোচনায় অংশ নেন , যা শেষ পর্যন্ত ইউনূস মন্ত্রণালয় গঠনের দিকে পরিচালিত করেন।
যার মধ্যে হেফাজতের একজন সদস্য এএফএম খালিদ হোসেননও ছিলেন । তার রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি, তিনি বাংলাদেশের এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে একজন সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি মাসিক ম্যাগাজিন রহমানি পাইগামের সম্পাদক ।
আইয়ামে জাহিলিয়াতের পর ‘আওয়ামী জাহিলিয়াত’ স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মামুনুল হক। তিনি বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের অভূতপূর্ব ঐক্য বিনষ্ট করতে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের শত্রুরা বিদেশের মাটিতে বসে আবার ষড়যন্ত্র করছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে শানে রিসালাত সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। যশোর জেলা হেফাজতে ইসলাম এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। বুকের রক্ত দিয়ে হলেও সেন্টমার্টিন থেকে শুরু করে দেশের প্রতি ইঞ্চি ভূমি রক্ষা করা হবে।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যেমন নস্যাৎ করা হয়েছিল, ঠিক একই কায়দায় জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। স্বাধীনতার চেতনাকে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার নানাভাবে বিকৃত করেছে।
যশোর জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি আনোয়ারুল করীমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন হেফাজতের মহাসচিব সাজিদুর রহমান, নায়েবে আমির মাহফুজুল হক, মুশতাক আহমেদ, সাখাওয়াত হুসাইন, নাজমুল ইসলাম কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক, কুষ্টিয়া জেলা সভাপতি আব্দুল হামিদ, খুলনা জেলা সভাপতি গোলামুর রহমান, মাগুরা জেলা সভাপতি কাজী জাবেদ বিন মুহসীন, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি ওসমাস গনি, আরিফ বিল্লাহ, যশোর জেলা উপদেষ্টা আব্দুল মান্নান, মুজিবুর রহমান, বেলায়েত হোসেন, হামিদুল ইসলাম, নাজির উদ্দীন, শামসুর রহমান, হাফিজুর রহমান, মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।
