নিয়োগের সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। পদ্ধতি দুটি হলো:
পদ্ধতি–১: বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮-এর অধীনে সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রের মূলনীতি অনুসরণ করে সংবিধান ব্যাখ্যা করতে পারে। এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্টের বিভাগের রিট এখতিয়ারসম্পন্ন যেকোনও মোশন কোর্টে একটি স্যুয়োমোটো রুলের জন্য আবেদন করবেন যেখানে তিনি মহামান্য হাইকোর্টের কাছে সংবিধানের মূলনীতি ব্যাখ্যা করে এবং ডকট্রিন অব নেসেসিটি অনুসরণ করে সংসদের অবর্তমানে কীভাবে অন্তর্বর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রার্থনা করবেন। এক্ষেত্রে হাইকোর্ট সংবিধানের মূলনীতি ব্যাখ্যা করে এবং ডকট্রিন অব নেসেসিটি নীতি অনুসরণ করেন রাষ্ট্রপতি নিয়োগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে পারেন। এক্ষেত্রে হাইকোর্ট নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কমিটি গঠন করে দিতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে পারেন।
এছাড়া রাষ্ট্রপতির অসুস্থতা বা বিদেশে গমনের কারণে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ের সচিব রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এই মর্মে দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসরণ করে অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করবেন।
পদ্ধতি–২: যদি উপরের পদ্ধতি অনুসরণ করতে গিয়ে হাইকোর্ট স্যুয়োমোটো রুল দিতে অস্বীকৃতি জানায় সেক্ষেত্রে এই দ্বিতীয় পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি সার্চ কমিটি গঠন করবে। এই সার্চ কমিটিতে অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল থেকে একজন করে প্রতিনিধি নেবেন। ওই সার্চ কমিটি একজন যোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য বাছাই করবেন। অতঃপর সরকার সার্চ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করবেন।
এক্ষেত্রে নতুন রাষ্ট্রপতি তার অফিসিয়াল কার্যক্রম শুরু করার প্রারম্ভেই তিনি নিজে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আবেদন করবেন। এক্ষেত্রে নতুন রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে এই মর্মে রেফারেন্স চাইবেন যে সংসদের অবর্তমানে জাতীয় স্বার্থে তার নিয়োগ আইন অনুযায়ী বৈধ কিনা? এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংবিধানের মূলনীতি, জনস্বার্থ, ডকট্রিন অব নেসেসিটি অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতির নিয়োগ বৈধ হয়েছে কিনা এই মর্মে সিদ্ধান্ত দেবেন। এক্ষেত্রেও রাষ্ট্রপতির অসুস্থতা বা বিদেশে গমনের কারণে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ের সচিব রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এই মর্মে দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। ওই দুটি পদ্ধতির যেকোনও একটি প্রয়োগ করে বিদ্যমান রাষ্ট্রপতি নিয়োগ সংক্রান্ত সাংবিধানিক জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
নোটিশে পাওয়ার ৩ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে সংবিধানের মূলনীতি ও আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে জানানো হয়েছে।