ইলিশের প্রতি লোভ নেই এমন মানুষ বিরল। আর এই ইলিশ মাছটি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের প্রথম স্থানে অবস্থান করছে। ইলিশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ইলিশও রাজনীতির কবলে দীর্ঘ সময় ধরে বন্দী। বড় বড় ইলিশগুলো দেশের কিছু বড় মহাজনদের ভাগ্যে জোটলেও বেশ কড়া দামেই জুটে বাকি ইলিশ চলে যায় দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে।
দেশের প্রতিটি অঞ্চলের মানুষজন যে যখনই মাছ কিনতে মাছ বাজারে ঢুকেছে ইলিশের প্রতি নজরটা একবার হলেও দিয়েছে। কেনার ব্যপক ইচ্ছে থাকলেও অধিকাংশ মানুষের কিন্তু ক্রয় ক্ষমতা নেই। নিম্নমধ্যবিত্তরা কোন রকম ৭০০ টাকা কেজির দরে বছরে দু’একবার ইলিশ কেনার সাধ্য হলেও দারিদ্র জনগোষ্ঠীর পক্ষে বছরে একবারও ইলিশ কেনার সাধ্য হয়ে উঠেনা।
অথচ, এপ্রিল ২০১৬ সালের এশীয় উন্নয়ণ ব্যাংক এর তথ্যমতে, বাংলাদেশে আনুমানিক ১৫.৭৯ কোটি মানুষ বসবাস করে, যার ৩১.৫% জাতীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।
দামের কথা চিন্তা করে পার্শবর্তী দেশ ভারত অনেক আগে থেকেই পিচ হিসেবে মাছ মাংস কেনার ব্যবস্থা চালু রেখেছে।
ইতিমধ্যে রাজশাহীতে কেটে ইলিশ মাছ বিক্রি করার প্রথা চালু হয়েছে। যা অত্যন্ত প্রশংশনীয়। যার ফলশ্রুতিতে ক্রেতাগণ চাইলে তার সাধ্যমতো ইলিশ মাছ কিনতে পারবেন। এতে ক্রেতারাও যেমন খুশি তেমনি খিশি বিক্রেতাগণও।
একজন বিক্রেতারা বলেন, সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রামের নিচে হলে ইলিশ কেনা-বেচায় লোকসান হবে তাদের। বিক্রেতা আরও জানান, কমপক্ষে ২৫০ গ্রাম ইলিশ মাছ ক্রেতারা কিনলে মাছের প্রায় সব অংশ থেকে পাবে তারা।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজারের মাছপট্টিতে ইলিশ মাছ কেটে বিক্রির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন, রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের নেতারা। এ সময় পরিষদের নেতারা ব্যবসায়ীদের ক্রেতাদের কাছে সব ইলিশ মাছ কেটে বিক্রির জন্য নির্দেশনা দেন। পরে রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদ ও ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে কেটে টুকরা করে ইলিশ মাছ বিক্রির সীদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, আকার ভেদে রাজশাহীর বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ২২০০ টাকা পর্যন্ত। এসব মাছের ওজন ৬০০ গ্রাম থেকে শুরু করে এক কেজি পর্যন্ত। ফলে কেজি ওজনের ইলিশ মাছগুলো অনেক সময় ক্রেতাদের কিনতে হয় ২ হাজার টাকার বেশি দামে। ফলে চড়া দামের কারণে অনেক নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের পক্ষেও আস্ত ইলিশ কেনা সম্ভব হয়ে উঠেনা। এতে করে ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায় জাতীয় এই মাছটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহীর সাহেব বাজারে ক্রেতারা কাটা ইলিশ মাছ কিনতে পারবে। যার যা সমর্থ সেই অনুযায়ী মাছ কিনতে পারবেন ক্রেতারা। ক্রেতারা ১০০ গ্রাম, ২০০ গ্রাম, ২৫০ গ্রাম ইলিশ মাছ কিনতে পারবে।
রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের নেতাদের কাছে এই মহতি উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, বিশেষ করে ইলিশ মাছটির দাম সব সময় বাড়া থাকে এতে করে গরিব মানুষগুলো বছরে এক টুকরা ইলিশও খেতে পাননা। প্রথমত তাদের কথা চিন্তা করেই এমন সীদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কেজি হিসাবে মাছের যে দাম ধরা হবে, কেটে একই দাম নিবে মাছ ব্যবসায়ীরা। যদি কোন ইলিশ মাছ বিক্রেতা ক্রেতাদের কাছে কাটা ইলিশ মাছ বিক্রি করতে অস্বীকার করে তাহলে মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতিকে অবগত করার সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন তারা। তারা
রাজশাহীর মত যেন দ্রুতই সারাদেশের প্রতিটি জেলায় ব্যবসায়ী সমন্বয় নেতারা এমন মহতি উদ্যোগটি গ্রহন করেন। যাতে করে দেশের প্রতিটি অঞ্চলের প্রতিটি দরিদ্র জনগোষ্টী তৃপ্তি সহকারে ইলিশ খেতে পারে বার্তা বাংলাদেশ ২৪ ডটকমের সম্মানিত সম্পাদক নুর এমডি চৌধুরী দেশের প্রতিটি জেলার সম্মানিত ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের নেতাদের প্রতি আহবান জানান।