মাওয়া ঘাট এখন অনেকটাই নিরব। যতটুকু শোরগোল শুনতে পাওয়া যায়,তার নব্বই ভাগই বানিজ্যিক। ইলিশ বিলাসে যারা দূর থেকে যায় তাদের সমাগম হয় মূলত দুপুর থেকে।শিমুলিয়া পৌঁছানো মাত্রই ডাকাডাকি করবে বাহারী নামের সবকটি রেস্তোরাঁর কর্মীরা। গাড়ির পথ রোধ করে দাঁড়াবে অন্ততপক্ষে পাঁচজন। উদ্দেশ্য তাদের রেস্তোরাঁয় আপনাকে খেতে বাধ্য করবে।
এই কাজটি যথেষ্ট বিরক্তিকর।তবে আপনি যদি শক্ত মনোবলের হোন তাহলে এসব বিরক্তি এড়িয়ে এগিয়ে যাবেন নদীর দিকে। দেখবেন ঘাটের ইজারা নেয়া দলের কয়েকজন টিকেট হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে।এটা এখনও বৈধ কিনা, সে বিচারে গেলাম না।টিকেট নিয়ে সোজা পৌঁছে গেলাম নদীর কিনারার একটি রেস্তোরাঁয়। এই রেস্তোরাঁর তেমন সাজগোজ নেই।আলগা পোজপাজ নেই। কিন্তু কর্মীরা ভীষণই আন্তরিক ও কেয়ারিং। মাছ দেখে পছন্দ করে কিনে কাঁটিয়ে নিলাম।ইলিশ মাছ নিজেই ভেজে নিলাম।সাথে বেগুন ভাজা, কয়েকরকমের ভর্তা নিলাম।ইলিশের লেজের ভর্তাটা খেতে দুর্দান্ত লাগলো। সবমিলে বলা যায় ভুড়িভোজ সেরে নিলাম ঘরোয়া পরিবেশে।
এরপর নদীর পারে ঘুরতে বের হলাম। পুরোটা এলাকা
বেদেনী আর ভিক্ষুকের দখলে। তাদের কারণে আপনি ঠিকঠাক এনজয় করতে পারবেন না।সারাক্ষণ ঘ্যানঘ্যান করে আপনার খুশির বারোটা বাজিয়ে দিবে। তবে একটু কৌশলি হলে ওরা বিশেষ সুবিধা করতে পারবে না।এবং নিরাপদ দূরত্বে থাকবে।
ঘাটে রয়েছে হরেকরকম দোকান। দোকানিরা হাঁকডাক করবে, আসেন আসেন বার্মিজ আচার কেনেন,শামুক ঝিনুকের জিনিস কেনেন। বেঁতের তৈরি পণ্য, গয়না, সাজগোজের পণ্য,শিশুদের খেলনা, ঘর সাজানোর পণ্য ও ফুলের দোকান রয়েছে। সবকিছুরই দাম তিনগুণ।সুতরাং কেনাকাটা জাষ্ট ইগনোর করুন।
নদীরপারে একটি লোভনীয় ডাক শুনতে পাবেন, নৌকায় ঘুরলে ১০০ টাকা (জনপ্রতি)। ব্রিজ ঘুরলে ১০০ টাকা (জনপ্রতি)। নৌকায় চেয়ারে বসার ও লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্খা রয়েছে। ইচ্ছে করলে ঘুরতে পারেন।অবেলায় ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া কিছু কাশফুল পাবেন আশেপাশে।
সময়ে কাশফুলের সাথে ছবি তুলতে না পারাটা ভুলে কিছু ছবি তুলে নিতে পারেন।মন্দ লাগবে না এটা বলে দিতে পারি।
নদীর পারে রয়েছে প্রচুর চায়ের দোকান। তো চা প্রেমি নদীর পারে বেঞ্চিতে বসে সন্ধ্যের আগে এক কাপ চা পান করতে করতে নদীর জলে সূর্য ডুবে যেতে না দেখলে কিন্তু ভীষণই আফসোস থেকে যাবে।