বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা আগের মতোই অব্যাহত আছে বলে ভারতের সেনাপ্রধান জানান। তিনি বলেন, আমাদের অফিসাররাও এনডিসি-র জন্য যথারীতি সেখানে গেছেন, ওদিক থেকে কোনো সমস্যাই নেই।
বাংলাদেশে যখন গত আগস্ট মাসে ক্ষমতার পালাবদল হয়, তখন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বাংলাদেশে তার কাউন্টারপার্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে ‘সার্বক্ষণিক যোগাযোগে’ ছিলেন বলে জানিয়েছেন।
গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দিল্লিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল দ্বিবেদী সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য জানান। খবর বিবিসি বাংলা।
এদিকে বাংলাদেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মি. দ্বিবেদী বলেন,‘আজকের তারিখে আমাদের কোনো পক্ষেরই আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা (ভালনারেবিলিটি) নেই। আমার সে দেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ আছে। বস্তুত সে দেশে যখন পালাবদল ঘটল, তখনো আমরা নিজেদের মধ্যে সব সময় যোগাযোগ রেখে চলছিলাম। এরপর গত ২০শে নভেম্বরও আমাদের মধ্যে একটা ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে, দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই চলছে,’ বলছিলেন মি. দ্বিবেদী।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে অপসারিত হয়ে দেশত্যাগ করেন এবং বাংলাদেশের একটি মিলিটারি এয়ারক্র্যাফটে করে দিল্লির কাছে হিন্ডন এয়ারবেসে এসে অবতরণ করেন। তখন থেকে আজ পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে তিনি ভারতেই রয়েছেন। আজ ভারতের সেনাপ্রধান কার্যত এটাই নিশ্চিত করলেন যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দেশ ছাড়ার এই প্রক্রিয়াটা দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় রেখেই সম্পন্ন হয়েছিল।
জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বাংলাদেশে তার কাউন্টারপার্টের দেয়া একটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে আরও বলেন, উনি যেমন বলেছেন ভারত তাদের জন্য স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ, কথাটা আমাদের দিক থেকেও সত্যি। আমরা পরস্পরের প্রতিবেশী, আমাদের একসঙ্গেই থাকতে হবে ও পরস্পরকে বুঝতে হবে – যেকোনো ধরনের শত্রুতা আমাদের উভয়ের জন্যই হানিকর হবে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতাও আগের মতোই অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান। বলেন, আমাদের অফিসাররাও এনডিসি-র জন্য যথারীতি সেখানে গেছেন, ওদিক থেকে কোনো সমস্যাই নেই। শুধু আমাদের যে যৌথ সামরিক মহড়া হওয়ার কথা ছিল, সেটা বর্তমান পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে, পরিস্থিতির উন্নতি হলে সেটাও অনুষ্ঠিত হবে।
তবে জেনারেল দ্বিবেদী যোগ করেন, দুই দেশের সম্পর্ক তখনই স্বাভাবিক হবে, যখন একটি ‘নির্বাচিত সরকার’ বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসবে।
‘যদি আপনারা (দুই দেশের) সম্পর্কের কথা বলেন, সেটা ওখানে নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত সম্ভব নয়। তবে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক একদম ঠিক আছে, সব মসৃণভাবে চলছে,‘ মন্তব্য করেন ভারতীয় সেনাপ্রধান।