প্রবীণ যত্ন আমাদের সামাজিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রবীণ যত্নের ইতিহাস জুড়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। এই পরিবর্তনের ইতিহাস শুধুমাত্র আমাদের বয়স্ক জনসংখ্যাকে সমর্থন করার অগ্রগতির উপর নির্ভর করেনা বরং সমসাময়িক অনুশীলন, বন্ধুত্ব, বিনোদন, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের ফলে এই প্রবীণদের প্রতি বিশ্বজুড়ে আন্তরিকতার ব্যপক উন্নতি সাধিত হয়েছে।
প্রবীণ যত্নটা আসলে কি?
প্রবীণ যত্নটা আসলে সম্পুর্ণ মানবিক একটা উপাদান। বয়স্কদের যত্নের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক পরিষেবা। সহায়তা প্রদান করা যারা দৈনন্দিন কাজকর্ম নিজেরা করতে অক্ষম। যাদের চিকিৎসার প্রয়োজন কিংবা সামাজিক আনুষ্ঠানে উপস্তিতি এসবের জন্য সহায়তার প্রয়োজন।
এই যত্নগুলিই ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন রূপ নিয়েছে। পরিবার-পরিচালিত সহায়তা থেকে শুরু করে বিশেষায়িত সুবিধাগুলিতে পেশাদার যত্ন পর্যন্ত আজ বিশ্বেআলোচিত সেবা। প্রবীণ যত্নের সামাজিক ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আমাদের মূল্যবোধ এবং বয়স্ক প্রজন্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। বয়স্কদের যত্নের বিষয়ে সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি যুগ যুগ ধরে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।
ওয়েস্টার্ন সোসাইটিগুলির কথা যদি বলি এখানে পারিবারিক গতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক চাপের কারণে সাধারণত পরিবার-ভিত্তিক যত্ন থেকে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে বয়স্কদের সেবা নির্ধারণা করা হয়।
বয়স্কদের সেবা নিশ্চিত করার পেছনে বড় একটি ভুমিকা পালন করে তা হলো আমাদের প্রাচ্যের সংস্কৃতি। প্রাচ্যের সংস্কৃতি পারিবারিক যত্নের ঐতিহ্য বলা যেতে পারে। আজকাল প্রাচ্যের নীতি সামাজিক নীতিমালায় রুপান্তরিত হয়েছে। কখনও কখনও পারিবারিক যত্ন নিশ্চিত করার জন্য সরকারী নীতি দ্বারা শক্তিশালী করা হয়।
সুইডেন এবং জাপানের মতো দেশগুলিতে আধুনিক নীতিগুলি নির্ধারণ ও প্রয়োগ করে, থাকে যা মর্যাদা এবং স্বাধীনতা বজায় রাখার উপর যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করে বয়স্কদের যত্নের ক্ষেত্রে মানদণ্ড স্থাপন করেছে বেশ। যা দেখে এখন অন্যান্য দেশগুলো অনুকরণ করার চেষ্টা করছে।
বিশ্ব আজ বয়স্ক জনসংখ্যার দিকে ইতিমধ্যেই যত্ন এবং সহায়তার চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। আজ, বিশ্বে ৮০৭.৮ মিলিয়ন মানুষ যাদের বয়স ৬৫ বছর বা তারও বেশি যা ১৯৫০ সাল থেকে ছয়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ ২ বিলিয়ন বয়স্ক মানুষের মধ্যে ৫৫% নারী হবে, যাদের বয়স ৫৯ থেকে ৮০+। প্রাথমিকভাবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশ গুলোতে হবে।
২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত সভায় প্রস্তাবনা পাশ হয়, বিশ্ব প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক যত্ন ও সহায়তা দিবস পালন করবে। এটি লিঙ্গ সমতা এবং সমাজ ও অর্থনীতির টেকসই প্রচারে যত্ন এবং সহায়তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
যেহেতু নারীরা পুরুষদের তুলনায় গড়ে ৫ বছর বেশি বাঁচে সেটাকে বিবেচনায় রেখে তারা বয়স্ক জনসংখ্যার একটি বড় অংশ একত্রিত করবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন মতে পুরুষদের চেয়ে নারীদের সেবার হার বেশি থাকা প্রয়োজন।
ছবি: সংগৃহীত