বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ৯, ২০২৫
Homeঅন্যান্যবিজয়ের ৫৪বছর পরও প্রকৃত মুক্তিবোদ্ধাদের নামের তালিকা সংরক্ষণ হয়নি

বিজয়ের ৫৪বছর পরও প্রকৃত মুক্তিবোদ্ধাদের নামের তালিকা সংরক্ষণ হয়নি

নুর এমডি চৌধুরী, সম্পাদক, বার্তা বাংলাদেশ ২৪ ডটকম

গতকাল ছিল ১৬ই ডিসেম্বর। বিজয়ের ৫৪তম বছর। আমরা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করিনি কিংবা আমাদের নিকট আত্মীয়স্বজন কিংবা আপনজন কাউকে এই যুদ্ধে হারাইনি তাদের আনন্দ আর যারা হারিয়েছেন তাদের আনন্দের মধ্যে পার্থক্য আছে।

আবার যারা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেও অদ্যাবধি “মুক্তিযোদ্ধা” নামের এই মহান রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন তাদের অন্তরে বিজয়ের একটা অন্যরকম আনন্দ কাজ করে তেমনি দিনশেষে বেদনা বিধুরও হন।

সেই বেদনারও একটা সীমাবদ্ধতা কাজ করতো যদিনা তারা দেখতো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার পরিবর্তে কিছু ভূয়া মুক্তযোদ্ধারা “মুক্তিযোদ্ধা” নামের রাস্ট্রীয় এই সম্মানজনক স্বীকৃতির সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। দিন শেষে রাতের আঁধারে এদের হৃদয় ভাংগা কষ্ট দেখে কে!

তিরিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ নিঃস্বার্থভাবে দেশ রক্ষার্থে জীবন দান এর স্বীকৃতি স্বরুপ রাষ্ট্র আজও ব্যর্থ রয়েছে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশে। এটার দায়ভার কে নিবে। সংবিধান, রাষ্ট্রের জনগণ নাকি তথাকথিত রাষ্ট্রের দায়িত্ব থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর।

৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের আজকের ২৪’র ছাত্র জনতার আন্দোলন গুলো দেশের অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে। অথচ অর্ধশতাধিক বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকৃত মুক্তি যুদ্ধারা আজোও বঞ্চিত রয়েছেন স্বীকৃতি থেকে।রাষ্টীয় সকল সুযোগ সুবিধা থেকে। শুধু তাই নয়, স্বীকৃতির প্রত্যাশায় দিন গুনতে গুনতে অনেক অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধারা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন যাদের অনেকের তথ্য দেয়ার মতোও কেউ অবশিষ্ট নেই।

রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। আর জনগণ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করেন সরকার। সরকারের মৌলিক কিছু কিছু দায়িত্ব থাকে যা জনসাধারণকে ভাবিয়ে তোলে। এমন বিষয়গুলোর প্রতি নিশ্চয়ই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা কাজ করা উচিত। কিন্তু আমরা বাংলাদেশের জনগণ কি দেখলাম।

আজ ভোরে মিষ্টি মাখা রোদে বেলকনিতে বসে ফেইসবুক এর পাতায় চোখ মেলছিলাম। গতকাল সারাদিনের নানা আনন্দআয়োজনের কথামালায় ফেইসবুক এর পাতায় যেন রোমান্টিক বসন্ত দুল খাচ্ছিলো। হঠাৎ এরই মাঝে একটা বেদনাদায়ক পোষ্ট চোখ কাড়ে।

“……যুদ্ধদিনের প্রতিটি মুহুর্তে ছিল এই দিনটির অপেক্ষা; দেশ হানাদারমুক্ত হবে, বিজয়ের কাঁধে হাত রেখে আরও লাখো মানুষের সাথে ফিরবে আমার পরমাত্মীয়রাও”
ফেরেনি। আমার আব্বা প্রফেসর আবুল কাসেম না, মেজো ভাই হবুডাক্তার আবুল আমজাদও (পেয়ারা) না।
ওদের মৃত্যুর কোনো তারিখ নাই, সনদ নাই, সমাধি নাই….এ দেশের ধুলিকণায়, গাছের সবুজে, সূর্যের লালিমায়, শীতের কুয়াশায়, আমাদের জল টলটল নদীচোখে ওরা মিশে আছে। এই দেশটাকে লুঠ হতে দেখলে খুব কষ্ট হয়, পুরোনো ক্ষত ফেটে রক্ত ঝরে।

১৬ই ডিসেম্বর, বিজয়ের আলোয় আশার পথে হাঁটতে শুরু করেছি, আজও হাঁটছি…..হাঁটছে লাখো শহিদের অতৃপ্ত আত্মা…বিজয় দিবস অমর হোক! সকল আত্মদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।

তার এই পোস্ট পড়ে মর্মাহত সমবেদনা জানিয়ে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। আমিও ব্যক্তিগতভাবে সমবেদনা জানিয়ে বলি, রাষ্ট্রের সকল কাজের উর্ধে উঠে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজ করুন। সুদে আসলে তাদের সম্মানিত করুন। সকল রাষ্ট্রীয় সুযোগ দিন। ৭১’র নয় শুধু ২৪’র ও পুরো মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস জাতীয়র কাছে তুলে ধরুন।

- Advertisement -spot_img
আরও সংবাদ
- Advertisement -spot_img
এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here