বুধবার, জানুয়ারি ৮, ২০২৫
Homeজাতীয়অগ্নিকন্যা’ খ্যাত মতিয়া চৌধুরী আর নেই

অগ্নিকন্যা’ খ্যাত মতিয়া চৌধুরী আর নেই

ডেস্ক রিপোর্ট

ষাটের দশকের সামরিক শাসনবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অগ্নিকন্যা নামে খ্যাত বেগম মতিয়া চৌধুরীর প্রয়াণে শোক জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বজলুর রহমান স্মৃতিপদকের জুরিবোর্ডের সদস্যরা।

দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে ৮২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জাতীয় সংসদের সাবেক সরকারদলীয় এ উপনেতা। তিন মেয়াদে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

মতিয়া চৌধুরীর ভাতিজা জামিল হোসেন পলাশ বলেন, বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের জানাজা বৃহস্পতিবার (আজ) বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাজধানীর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হবে। এরই মধ্যে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নতুন জায়গা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের কাছে। অন্যথায় স্বামী বজলুর রহমানের কবরে তার লাশ দাফন করা হবে।

এলাকার মানুষের দাবি থাকলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মতিয়া চৌধুরীকে নিজের নির্বাচনী এলাকায় নেওয়া হবে না বলেও নিশ্চিত করেন পলাশ।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন অসুস্থ মতিয়া চৌধুরী সপ্তাহখানেক আগে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন। বুধবার সকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে দুপুর ১২টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের আগে থেকে তিনি কোমরে আঘাতজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। অস্ত্রোপচারের পর তাকে রাজধানীতে বোনের বাসায় নেওয়া হয়।

শেরপুর-২ আসন থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মতিয়া চৌধুরী। ১৯৯৬ সালে সপ্তম, ২০০৮ নবম ও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদের কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর দ্বাদশ সংসদের উপনেতার দায়িত্ব দেওয়া হয় মতিয়া চৌধুরীকে। এমনকি দীর্ঘ এই সময়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েও করমুক্ত গাড়ি কেনার সুবিধা গ্রহণ থেকেও বিরত ছিলেন সাবেক এই মন্ত্রী।

১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে জন্মগ্রহণ করেন মতিয়া চৌধুরী। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। স্কুলজীবনে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হলেও ইডেন কলেজে পড়ার সময় বাম ধারার ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি।

১৯৬১-৬২ মেয়াদে তিনি ইডেন কলেজ ছাত্রী সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হন। ১৯৬৪ সালে সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।

ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে তিনি একজন সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন।

১৯৭৯ সালে ন্যাপ ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তিনি। ১৯৮৬ সালে দলের কৃষিবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এক সময় তাকে দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হয়।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বহুবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে মতিয়া চৌধুরীকে। জেলজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ‘দেয়াল দিয়ে ঘেরা’ নামে একটি বই লেখেন তিনি।

- Advertisement -spot_img
আরও সংবাদ
- Advertisement -spot_img
এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here