বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)-এর কার্যক্রম নিষিদ্ধের জন্য সরকারকে কোনরুপ আদেশ দিতে চাননা হাইকোর্ট
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন বলেন, সরকার এটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এবং প্রধান একটি ইস্যু ধরে অ্যাকশন নিয়েছে। পুলিশ তিনটি মামলা দায়ের করেছে। তিনটি মামলার একটিতে ১৩ জন, একটিতে ১৪ জন ও অপরটিতে ৪৯ জনের নামে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ছয়জনকে শনাক্ত করা গেছে, যাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। আর যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে নিশ্চয়ই আরও তথ্য বের হয়ে আসবে।
আসাদ উদ্দিন আরও বলেন, ‘পুলিশসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। শুধু চট্টগ্রামেই নয়, যেসব স্থানের কথা এসেছে, যেসব জায়গায় এ ধরনের তৎপরতা দেখা গেছে, প্রত্যেক জায়গাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। সরকার এটাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে অ্যাড্রেস করেছে।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে এ সময় আদালত বলেন, ‘আমরা শুনে আশ্বস্ত হলাম, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছেন। ঘুরেফিরে একটাই কথা, দেশের জনগণের জান ও মাল, কারও যেন কোন ক্ষতি না হয়, এটা সবারই চিন্তা। আপনারা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছেন শুনে আদালত আশ্বস্ত হয়েছে। আশা রাখছি, মনির (আইনজীবী, যিনি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন নজরে এনেছেন) বা মনিরের মতো যাঁদের উদ্বেগ, তাঁরাও আশ্বাস হবেন।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে আদালত বলেন, কর্তৃপক্ষকে জানাবেন, উনাদের তৎপরতা যেন জারি থাকে। অবশ্য জারি তো রাখবেনই আইন অনুসারে, যাতে কোনো কর্নার থেকে কেউ কোনো কথা বলতে না পারে।’
আইনজীবী মনির উদ্দিন বলেন, ‘দেশে অনেক কিছু আদালতে বিচার করতে পারি না। কিন্তু জনতা বিচার করে ফেলেছে। ভোটের অধিকার থেকে যতগুলো আন্দোলন হয়েছে, প্রত্যাখ্যাত হয়েছি। ইসকনকে এখন নিষিদ্ধ না করা হলে পরবর্তী সময়ে হয়তো রক্তের হোলিখেলার মধ্য দিয়ে নিষিদ্ধ হবে।’
আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্র এ বিষয়ে কাজ করছে, নিশ্চয়ই শুনেছেন। রাষ্ট্রযন্ত্র যেহেতু কাজ করছে, তাই উনাদেরই দায়িত্ব। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের। অন্তর্বর্তী এখন যে সরকার আছে, আমাদের বিশ্বাস উনারা অত্যন্ত একনিষ্ঠতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের উনাদের প্রতি আস্থা আছে।’
ইসকনের বিষয়ে আইনজীবী মনির উদ্দিন বলেন, আদালত থেকে হলে সুন্দর সমাধান হবে।
একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘আমরা মনে করি দেশের মানুষ অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান হলেও মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও পার্বত্য এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রত্যেকের প্রত্যেকের সঙ্গে। আমাদের বিশ্বাস এই সম্পর্ক কোনো দিন ভাঙবে না। আমাদের একজনের প্রতি একজনের যে অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এটা কোনো দিনও নষ্ট হবে না। আমাদের বাংলাদেশ সেই ধরনের, আমরা নাগরিক সেই ধরনের।’