দীর্ঘ কতগুলো বছর এই শ্লোগানকে শুধু বুকেই লালন করে এসেছি ধারণ করে এসেছি প্রকৃত ইতিহাসকে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার শাসনামলে উপড়িয়ে ফেলা হয়েছে দেশের প্রকৃত ইতিহাস।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ দেশটা যখন লাখো প্রাণের আত্মত্যাগের বদৌলতে স্বাধীনতার দ্বার প্রান্তে অপেক্ষা শুধু ঘোষণার।
বাংলার জনগণ সেদিনই বুঝে নিয়েছিল শেখ মুজিব কি চায় ইয়াহিয়ার কাছে। প্রত্যাশিত জনগণ শেখ মুজিবের মুখ থেকে এই স্বাধীনতা নামের শব্দটি উচ্চারিত হতে দেখেনি।
দেশ বাঁচাতে শহস্র, কোটি জনতার দেহে তখন রক্তক্ষরণ, ক্ষুধার্ত কোটি জনতা। মায়ের লজ্জাস্থান তখনও পাক-হানাদারদের নিপীড়নের চিহ্ন, ভাইয়ের লাশের হাজারও স্তুপের গন্ধ, বোনের শতত ঝুলন্ত লাশের মিছিল, শিশুর মরদেহে পথ ঘাট মাঠ, কোটি কোটি মুক্তি সেনাদের লাশের স্রোত, রক্তাক্ত নদী, নালা।
স্বাধীনতা ততক্ষণে অর্জিত হয়ে গেছে। শেখ মুজিবের কাছে সেদিন জনতা স্বাধীনতা ঘোষণা শুনার জন্য অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিল
কিন্তু মুজিব স্বাধিনতার ঘোষণা না দিয়ে ২৩ মার্চ অবধি ইয়াহিয়ার সহিত একের পর এক বৈঠক চালিয়ে গেছে।
মূলত: তার উদ্দেশ্য ছিল ইয়াহিয়াকে ভয় দেখানো আর ভয়ের মাধ্যমে তার আপন স্বার্থ চরিতার্থ করাই ছিল একটা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র।
২৫ মার্চ ১৯৭১ তাজউদ্দীনের উক্তি দিয়ে দৈনিক সংবাদের প্রধান শিরোনাম ছিল—‘অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা চলে না’। তারপর আসে সেই কালরাত। বর্বরতার সীমা ছাড়িয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। মানসিক ভারসাম্যহীনের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র, ঘুমন্ত অসহায় খেটে খাওয়া বাঙালিদের ওপর। ঢাকায় বয়ে যায় রক্তের বন্যা। পরদিন বাংলার আকাশে ওঠে স্বাধীনতার সূর্য।
১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, যুদ্ধ করেছেন, দেশ স্বাধীন করেছেন। স্বাধীনতা এনে দিয়ে তিনি আবার ব্যারাকে ফিরে গিয়েছেন। একজন নিঃস্বার্থ রাজনীতিবিদের উদাহরণ হচ্ছে জিয়াউর রহমান। অথচ যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি, যারা ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল, পাকিস্তানের কারাগারে মেহমানদারি করেছে, তারা ফিরে এসে এই স্বাধীন দেশটাকে বিরান ভূমিতে পরিণত করেছে।
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে ৭ই নভেম্বর সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমেই বাকশালী শক্তির সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা হয়েছিল।
৭ই নভেম্বর তৎকালীন সেনাপ্রধান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশকে এক অচলাবস্থা থেকে রক্ষা করেছিলেন বলেই আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। শুরু হয়েছিল বহুদলীয় রাজনীতির ধারা। তিনি দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে উন্নয়ন ও উৎপাদনে শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে একটি স্বনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন।