চোরের মাথা যতই কাটি চোরের কোন নিপাত নাই। তিনি যেন স্পষ্ট ভাষায় এ কথাটিই বলতে চাচ্ছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যাঁরা আছেন তাঁরা ভালো মানুষ, কিন্তু কাজের মানুষ নন। গত চার মাস চার দিনে দেশে উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো পরিবর্তন এখনো লক্ষ্য করা যায়নি। উল্টো এক চোরের দল বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে আরেক চোরের দল লুটপাট ও দখলদারত্বের রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বগুড়া জেলা পরিষদ মিলনায়তনে মাহমুদুর রহমান মান্না দলের এক কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নাগরিক ঐক্য বগুড়া জেলার নেতা মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে তৃণমূলের কর্মীদের নিয়ে আয়োজিত এ সভায় আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিব আনোয়ার, কোষাধ্যক্ষ শাহনাজ হক, সদস্য আবদুর রাজ্জাক তালুকদার প্রমুখ।
সভায় মাহমুদুর রহমান বলেন, ঊর্ধ্বমুখী বাজারে সাধারণ মানুষের জনজীবন যখন দিশেহারা তখন গত চার মাসে কেন এখনো ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙা হলো না? কেন তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা গেলোনা।
৫ আগস্টের পরেও এখনো পুলিশ বাহিনী ও প্রশাসনে কেন আস্থা ফিরে আসেনি। জুলাই আন্দোলনে যাঁরা দেখে দেখে ছাত্র–জনতার ওপর গুলি করল, সেই পুলিশ সদস্যরা এখনো বহাল চাকুরিতে বহাল রয়েছেন বলেও মাহমুদুর রহমান মান্না দাবি করেন।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘ভালো একটি নির্বাচনের জন্য সবার আগে প্রয়োজন ভালো একটি পুলিশ বাহিনী, আমলাতন্ত্র ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন। তবে আমরা বলছি না যে এখনই নির্বাচন দিতে হবে। তবে সংস্কার হোক গণমানুষের কল্যাণের জন্য।’
ভারতের সঙ্গে কূটনেতিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মান্না বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে বন্ধুত্বের মতো, তবে প্রভুত্বের সম্পর্ক নয়। দেনা–পাওনার হিসাব কড়ায়–গন্ডায় বুঝিয়ে নেওয়া হবে। এখন সময় এসেছে নিজেদের পাওনা বুঝে নেওয়ার।’
বিগত শেখ হাসিনা সরকারের দুর্নীতির নানা ফিরিস্তি তুলে ধরে মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে শুধু লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। তারা দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে। জনগণ দেশে কোনো নির্বাচিত সরকার পায়নি। রাতের ভোট দিনে করে তারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে।
লক্ষ করলে দেখা যায় সব মন্ত্রণালয়েই তাদের নেতা-কর্মীরা এককভাবে কাজ করেছে। যে কারণে দেশের ১৮ কোটি জনগণ সবকিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে মেট্রোরেল, প্রতিটি প্রকল্পেই দুর্নীতির মহোৎসব হয়েছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও এখনো তাঁর দোসররা দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা আবারও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। তাদের কোনো ষড়যন্ত্র আর বাস্তবায়িত হতে দেওয়া যাবে না।