আজ প্রয়াত এম ফরিদুল আলম তৌফিকুল সাহেবের নবম মৃত্যু বার্ষিকী। ২০১৫ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর ঢাকা সিএমএইচে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জনাব এম ফরিদুল আলম তৌফিকুল জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানাধীন ঐতিহ্যবাহী গুনারীতলা গ্রামের সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারের প্রয়াত তাহের দারোগার কৃতি সন্তান। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছিলেন ন্যায় ও সত্য সংগ্রামে উদ্দীপ্ত। জনাব এম ফরিদুল আলম তৌফিকুল করাচী বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্য এমএ ডিগ্রী অর্জন করেন।
তৎকালীন সময়ে করাচীতে অবস্থান করছিলেন তার একমাত্র ভাগ্নী নুর-উন-নাহার মেরী। বর্তমানে যিনি জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও চেয়ারম্যান। মহিয়সী নারী, মাদার তেরেসা খ্যাত নুর-উন-নাহার মেরী বলেন, আমার ছোট মামা স্কুল জীবন থেকেই সত্য সংগ্রামে প্রতিবাদী বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর ও তুখড বক্তা ছিলেন। আমি মামার একনিষ্ঠ ভক্ত ও ছাত্র আন্দোলনে তার নিষ্ঠাবান অনুসারী ছিলাম। ভালো বক্তা হিসেবেও মামার নিকট হতে দীক্ষা গ্রহন করে ছিলাম।
মামাকে অনুস্বরণ করে আমিও হয়ে উঠেছিলাম এক বিপ্লবী ত্যাগী ও সংগ্রামী নেত্রী। ভালো বক্তা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলাম বিশেষ করে ২০০২ সালে জাতীয় যাদু ঘরে এক বর্নাঢ্য অনুষ্ঠানে সন্মানীত বিশেষ অতিথী হিসেবে বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়েছিলাম যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিচারপতি হাবীবুর রহমান স্যার সন্মানীত বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও জ্ঞাণী গুনীজন ছিলেন।
আমার বক্তব্য শুনার পর প্রধান অতিথী তার বক্তবে আমারে সেই অনুষ্ঠানের শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে ঘোষনা দেন পরবর্তিতে আয়োজক সংগঠনের পক্ষ হতে Crest and Certificate (letter of Appreciation ) দেয়া হয় আমাকে। ছোট মামা এম ফরিদুল আলম তৌফিকুল ছিলেন আমার রাজনৈতিক জীবনের শিক্ষাগুরু ব্যক্তিয় জীবনে আইডল। প্রতিবছর এই দিনটি এলেই নুর-উন-নাহার মেরী মামার স্মৃতি স্মরণে অশ্রুসিক্ত হন। আজ তিনি বার্তা বাংলাদেশ২৪ কে জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন।
জনাব এম ফরিদুল আলম তৌফিকুল করাচী শহরে অবস্থান কালে তিনি বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্ভুদ্ধ হয়ে সেখানেই তিনি প্রতিবাদের এক শিবির গড়ে তুলেছিলেন। আর তাতে যোগদান করেছিল এদেশের অসংখ্য ছাত্র সমাজ বুদ্ধিজীবী। করাচীর শহরে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তুলেছিলেন সেদিন। দেশ স্বাধীন হলে অনেক তরাই উৎরাই পেরিয়ে দেশের মাটিতে পা রাখেন তিনি। স্বাধীনতার সংগ্রামী প্রাণপুরুষ দেশে এসে বড় ভাই তোজাম্মেল আলম বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক থাকার সুবাধে সাংবাদিকতা গুরু করেন। পরবর্তীতে জনাব এম ফরিদুল আলম তৌফিকুল বিআরডিবির পরিচালক হন।
জনাব এম ফরিদুল আলম তৌফিকুল মৃত্যুকালে এক ছেলে ও দুই কন্যা সন্তান রেখে যান। বড় মেয়ে ফৌজিয়া তৌহিদ ইউএনডিপিতে (UNDP) ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি আপন ফুফাতো ভাই অবসর প্রাপ্ত কমান্ডার (বা.নৌ) জনাব তৌহিদুল ইসলাম এর স্ত্রী। ছোট মেয়ে সাদিয়া তৌফিক ডেনমার্ক এম্বাসিতে হাই অফিশিয়াল পদে কর্মরত। ছেলে সাইফুল্লাহ খালিদ দীর্ঘদিন কানাডায় অবস্থান করছেন।
মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি ।
জনাব এম ফরিদুল আলম তৌফিকুল উনি সম্পর্কে আমার মামা। মামার সাথে খুব বেশিদিন কথা বলার সুযোগ হহনি। একবার ঢাকার মিরপুর ১১তে দেখা। অনেকদিন পর হলেও আমি উনাকে চিনে ফেলেছি বাট কথা বলবো সাহস পাচ্ছিনা। আমার সাথে ছিলেন আমার ছোট ভায়রা এম নুরুজ্জামান । সে বললো আরে ভাই জিজ্ঞেস করেন সমস্যা কি! সমস্যা যে কি আমরা যারা উনার আত্মীয়সজন কেবল তারাই জানি। যাহোক ভয় কাটিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এক্সকিউজমি, আপনার হোম ডিস্ট্রিক্টটা কি জানতে পারি। সাথে সাথে গর্জে হোম ডিস্ট্রিক্ট মানে? আমি ভীষণ ভয়ে মানে, আপনাকে আমার চেনাচেনা মনে হচ্ছে সম্ভবত আপনি আমার মামা হবে। আপনার গ্রামের বাড়ি কি গুনারীতলা মাদারগঞ্জ জামালপুরে।
এবার বরফের মতো ঠান্ডা । হ্যা হ্যা তবে তুমি কে? বললাম, আমি উত্তর পাড়া কাশেম সরকারের ছেলে। মামা, একটু ভাবলেন, কাশের সরকার ও আচ্ছা আচ্ছা তুমি তাহলে সুমতন বুবুর ছেলে? জী তারপর অনেক গল্প হলো। আমি তখন এলএলবি প্রিলিমিনারী দিয়েছি। মামা জেনে খুশী হলেন। বললেন, এলএলবি কম্পলিট করেই চলে আসবা আমার কাচজে। আমার শেলক বেরিষ্টার রোকন তার সাথে তোমাকে দিয়ে দিবো।
সেই শেষ দেখা, সেই শেষ কথা। এরপর একদিন জানলাম, মামা আর নেই। আল্লাহ মহান মানুষটিকে বেহেস্ত নসীব করুন।আমিন